ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এক কৃষকের উপস্থিত বুদ্ধিতে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে রাজধানী থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের হাজারও যাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী রেলস্টেশনের কাছে গোলাবাড়ি গ্রামের ফরচুঙ্গী রেল ব্রিজ এলাকায়।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের কৃষক ছালেহ আহম্মদ (৬০) গরু চড়াতে বাড়ির কাছের ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের ফরচুঙ্গী ব্রিজের কাছে যান। তিনি ব্রিজের উপরের রেলপথ ভাঙা দেখতে পান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ঈদ স্পেশাল ট্রেনটিও ব্রিজের কাছাকাছি চলে আসে।

ছালেহ আহমেদের চিৎকারে রেলপথের পাশের রাস্তায় চলাচলকারী মানুষজনও দুর্ঘটনার আশঙ্কায় চিৎকার করতে থাকেন। ট্রেনে ভ্রমণকারী যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। উপায়ন্তর না পেয়ে কৃষক ছালেহ আহম্মেদ তাৎক্ষণিকভাবে পাশের রাস্তার এক ভ্যানচালকের কাছ থেকে মাথার গামছা নিয়ে রেল ব্রিজের উপরে রেললাইনে গিয়ে গামছা উড়িয়ে ট্রেন থামার সংকেত দেন।
সংকেত দেখতে পেয়ে চালক ভাঙা রেললাইনের ঠিক সামনেই ট্রেন থামাতে সমর্থ হন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি, বেঁচে যায় শত শত যাত্রীর প্রাণ ও ট্রেনের ১৭টি বগী।

ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ফরচুঙ্গী ব্রিজের কাছে দুই ঘণ্টা আটকে ছিল। ঢাকাগামী হাওর এক্সপ্রেস ট্রেন মশাখালী স্টেশনে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে ছিল। খবর পেয়ে গফরগাঁও পিডব্লিউআই থেকে রেল বিভাগের কর্মচারীরা এসে রেললাইন সাময়িক মেরামত করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফরচুঙ্গী ব্রিজ দিয়ে পাঁচ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালাচ্ছে রেল বিভাগ।

গফরগাঁওয়ের পিডব্লিউআই (ওয়ে) এটিএম নাজমুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলে বলেন, ফরচুঙ্গী ব্রিজের কাছে ৮ ইঞ্চি রেল লাইন ভাঙা ছিল। ব্রিজের রেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই রেল ব্রিজের উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করছে। আজকের (মঙ্গলবার) মধ্যে এই ভাঙা অংশ মেরামত করা হবে। পরে পূর্ণগতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

উল্লেখ্য, ঈদের আগের দিন শনিবার গফরগাঁও রেলস্টেশন ইয়ার্ড এলাকায় রেললাইন ভেঙে কয়েক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়। যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন।